কিছু এলোমেলো ভাবনার মাঝে আটকে যাই নিয়ত

14/07/2012 18:18

 

সাঁই করে আর একটা বাস চলে গেলে আমি পড়ে থাকি পথের বাঁকে যেখান থেকে আমি আমার পথটা শুরু করেছিলাম। যে রাস্তা দিয়ে আমি দিন দিন বাড়ি ছাড়ি আর বাড়ি ধরি সে রাস্তা মাঝে মাঝে দেখি তার নিজের মতো করে নিজের বাঁকবদল করেছে কিন্তু আমি পারিনি তার ছলাকলা ধরতে তাই রোজকার মতো আমি থেকে যাই আমার নিজের মতোই। কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করিনা নিজের মাঝে। মাঝে মাঝে ভাবি কেন এমন হয়! মাঝে ভাবতে পারিনা কেন এমন হতে পারে। তাই নিজের অলক্ষ্যেই নিজেতে ফিরে আসি পূণর্বার!
 
যে রাস্তা দিয়ে আমি ফি দিন হেটে-দৌড়ে নিজের বয়সকে বাড়িয়ে চলি সে রাস্তাতেই কোন একটা বেওয়ারিশ বিড়ালের থেতলে যাওয়া দেহ দেখতে পেয়েছি অদ্য। আমি জানি না মরে যাবার আগে বিড়ালটার এক চুমুক দুধ খাবার সাধ অথবা পেয়েছিলো না-কী! আমি জানি না, সত্যি সত্যি এমনকি তিন সত্যি দিয়ে বলি আমি এবং আমার পূর্বপুরুষের কেউই জানেনা এ সত্যটা। তবু আমি এক নিরীহ দর্শক হয়ে যাই এ দৃশ্যের। আমার মতো কত শত লোক নিজের ব্যস্ততাকে বাড়িয়ে হন-হন করে থেতলে যাওয়া বিড়ালদেহের পাশ দিয়ে নির্বিকার হেটে যায়। কেউই সামান্যতম অনুকম্পা দেখায়নি মরদেহের প্রতি। কেন দেখায়নি, কেন দেখাইনি তার উত্তর কারো কাছেই নেই এমনকি আমার নিজের কাছেই।
 
আমি আমাকে নিয়ে ইদানিং খুব বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। কেমনতর এ ব্যস্ততা তা ভাবতে গেলে কোন কাজই হয়না মাঝখানে কিছু অগ্রন্থিত ব্যস্ততা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। তাই মন খারাপের ক্ষণ দীর্ঘায়িত হয়ে যায় নিজের অজান্তেই। নিজেকে কোন এক সময় খুব করে স্বার্থপরের মতো বলেছিলাম- তুমি তোমার মতো করে ভাবো তবেই দেখবে আর সবে ভাবছে তোমার মতো করেই! এ ভাবাভাবিটা কাল হয় মাঝে মাঝে। তাই অদ্য কোন এক সময়ে অনুধাবণ করি আমার মতো আর বাকী সবাইও নিজেকে নিয়ে ভাবতে বসে গেছে। বুঝতে পারি নিজেকে নিয়ে ভাবতে গেলে আসলেই ঠকতে হয়! যে ঠকে যাবার পরে বুঝে সে ঠকেছিলো তার আসলে নিজেকে ফিরাবার পথটা সংকীর্ণ হয়ে যায়। কে জানে এমন করে নিজের পৃথিবীটা নিজেই সংকির্ণ করে ফেলেছি। কে জানে, কে জানে; আমি হয়তো জানিনা অথবা জানতে চাইনি!
 
একদিন খুব ভোরে একটা দলছুট চড়ুইকে আমার ভাড়াবাড়ির বারান্দায় হয়ে ঘরে ঢুকতে দেখেছিলাম। তারপর কসরত করে দরোজা জানালা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বোকা চড়ুইটা বুঝেনি তখন কী হতে চলেছে। আমি জানলাম না আমিও কী করতে চলেছি। তারপর আমি কিছু করিনি শুধু শুধু দেখতে চেয়েছিলাম চড়ুইয়ের ভাবজগত অথবা চোখে-মুখে কোন পরিবর্তন আসে কী-না! আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছিলাম কেমন উতলা হয়ে ছটফটাচ্ছিল সে। তারপর এক সময় আমি দরোজা খুলে দিয়ে সে ফুড়ুৎ করে হারিয়েছিলো আমার চোখের সামনে থেকে। এরপর থেকে আমার ঘরে আর কোন চড়ুই ঢুকেনি। হতে পারে ওরা ভেবে নিয়েছে আমি যোগ্য অতিথি হতে পারিনি অথবা পারবো না। মাঝে মাঝে আমি চড়ুইয়ের এ আগমন এবং গমনকে জীবনের প্রতিচ্ছবি হিসেবেই ভাবি। হতে পারে; আলবৎ পারে। আমি জানি না; আমি জানতে পারিনি!
 
ভাবছি এ হতে পারে জীবনের কোন একটা খন্ডাংশ! হুম, জীবন কতো রহস্যময়তা ঘেরা!
Back

Search site

একটি ব্যক্তিগত ব্লগ। সব দায় এবং দায়িত্ব লেখকের একান্ত নিজস্ব।